Sunday, July 24, 2011

পর্দার নারী বাজারে কেন?

পর্দার নারী বাজারে কেন?

বর্তমান সমাজ হচ্ছে সভ্য ও শিক্ষিত সমাজ। অথচ কাজ-কর্মে দৃষ্টি দিলে দেখা যায় তারা যেন আদিকালের দিকে ফিরে যেতে চলেছে। আদিকালের মানুষ উলঙ্গ থাকত। কারণ হলো তারা কাপড় তৈরী করতে জানত না কিন্তু বর্তমানে তো কাপড়ের অভাব নেই। প্রচুর কাপড় উৎপাদিত হচ্ছে। তবুও আজ কেন এই উলঙ্গপনা?

নারীদের পোশাক দেখলে মনে হয় না যে, তারা নারী। নারী যেন পোশাকে পুরুষ থেকেও খোলা হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সমাজে দেখা যায়, নারী প্যান্ট, শার্ট, পাতলা কাপড়, ছোট পোশাক ইত্যাদি পরিধান করছে, চুলগুলি পুরুষের চাইতে ছোট করে রাখছে, কালারিং করছে। অপরদিকে পুরুষেরা নারী জাতির মত পোশাক পরে চুল রেখে নারী হতে চলেছে। হাদীছ শরীফে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন- "রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই পুরুষের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন, যে নারীর মত পোশাক পড়ে"। অপর এক হাদীছে হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "মহিলারা হল পর্দায় থাকার মানুষ কিন্তু তারা যখন পর্দা উপেক্ষা করে বাহিরে আসে, তখন শয়তান তাদের প্রতি উকি মারে"।

আজ ভাবতে অবাক লাগে, কত দ্রুত বাংলাদেশের নারীরা পর্দাকে বিসর্জন দিয়ে প্রগতিশীলা হয়ে উঠেছে। ওড়না এখন প্রায় আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবার পথে। আর যদিও বা পরা হয়, তার পরিধান পদ্ধতি উল্টো হয়ে গেছে- গলায় ঝুলিয়ে পাট দুটো পিঠের উপর ছড়িয়ে দেয়া এবং এর মাধ্যমে বক্ষকে বে আব্রু করা। সত্যিই অভিনব ফ্যাশন এবং নিত্য নতুন স্টাইলে আধুনিক পদ্ধতি। বেহায়পনার মধ্যে আরো রয়েছে- পাতলা কাপড়ের আটসাট সালোয়ার কামিজ, টাইট জিন্সের প্যান্ট, হাতাকাটা গেঞ্জী, অতি পাতলা কাপড়ের ব্লাউজ, বুকের কাছে ভি-কাট, ইউ-কাট সম্বলিত ব্লাউজ, পিঠের কাছে ছড়ানো ইউ-কাট সম্বলিত বাউজ, দৈর্ঘে ছোট করে উদর প্রদর্শন অর্থাৎ ব্লাউজ ও ব্রা-র সাইজ একাকার করে ফেলা, পেটিকোটের সম্মুখভাগ নাভির নিচে নামিয়ে আনা ইত্যাদি।

প্রিয়নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "ঐ ব্যক্তির উপর আল্লাহ তা'আলার লানত হোক, যে কোন মহিলাকে ইচ্ছাকৃতভাবে দেখে। এমনিভাবে ঐ মহিলার উপরও আল্লাহর তা'আলার লানত হোক যে নিজেকে দেখায়"।

ভাবতেও অবাক লাগে আজ নারীরা সেজেগুজে রূপসী সেজে বয়ফ্রেন্ডদের হাত ধরে লেকে, পার্কে, সিনেমায়, বারে, চিড়িয়াখানায়, জাদুঘরে প্রভৃতি স্থানে ঘুরে বেড়াতে না পারলে জীবনটাকে বৃথা মনে করে। আর বন্ধুরাও ভ্রমরের ন্যায় উড়ে উড়ে মধুপান করে। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পুরুষদেরও আজকাল বিবাহটা একটা ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে। যৌতুক মনের মত না হলে ছেলেরা বিবাহ করতে রাজী হয় না। কারণ জৈবিক চাহিদা তো বিবাহ ব্যতীতই মিটাতে পারছে। তাই বিনা লাভে কেন ঝুকি মাথায় নিতে যাবে। বিবাহের পরেও তারা নিজের বিবাহিতা স্ত্রীকে বেগানা পুরুষের সাথে যেতে বারণ করে না। যেহেতু তারা যেভাবে ফুলে ফুলে উড়ে ভ্রমরের ন্যায় মধুপান তথা নারীর সুধা পান করে স্ত্রী ও তেমনি ভাবে পরপুরুষের সুধা পান করুক।

মহিলাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কোরআনে বলেন, "ইমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হিফাযত করে। তারা যেন যা সাধারনত প্রকাশমান তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নীপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভোক্ত দাসী, যৌনকামনা মুক্ত পুরুষ ও বালক- যারা নারীদের গোপন সম্পর্কে অঙ্গ, তাদের ব্যতিত কারও কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না কর। তারা যেন তাদের গোপন সাজসজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারনা না করে। মু'মিনগন, তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবাহ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও"। (সূরা নূরঃ ৩১)

বর্তমান বিশ্বের মানুষ শান্তির অন্বেষায় নিত্য নতুন আইন প্রণয়ন করে অগনিত অর্থ ব্যয় করছে। কিন্তু যে উৎস থেকে ফিতনা ফাসাদ ছড়াচ্ছে, সেটা বন্ধ করার কেউ নেই। আজ যদি ফিতনা ফাসাদের মূল কারন উদঘাটন করার জন্য নিরপেক্ষ কোন তদন্ত পরিচালনা করা হয়, শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশী সামাজিক অশান্তির কারণ নারী জাতির বেপরোয়া চালচলন।


 

No comments:

Post a Comment