Friday, October 21, 2011

রাস্তা-ঘাটে চলার মাসায়েল


রাস্তা-ঘাটে চলার মাসায়েল
v  বড় রাস্তা হলে ডান দিক দিয়ে চলবে।
v  স্বামীর সাথে বা মুরব্বীদের সাথে চললে পিছে পিছে চলবে।
v  দৃষ্টি নত করে চলবে।
v  হাত পা ছুঁড়ে ছুঁড়ে অহংকারের সাথে চলবে না।
v  রাস্তা অতিক্রম করার সময় যথাসম্ভব দ্রুত চলবে।
v  উপর দিকে উঠার সময় ডান পা আগে বাড়ানো এবং ‘আল্লাহু আকবার’ বলা সুন্নাত। নীচের দিকে নামার সময় বাম পা আগে বাড়ানো এবং ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা সুন্নাত। আর সমতল স্থান দিয়ে চলার সময় ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলা সুন্নাত।

চিকিৎসার মাসায়েল


চিকিৎসার মাসায়েল
v  রোগ-ব্যাধিতে চিকিৎসা করানো এবং ঔষধ সেবন করা মোস্তাহাব। কেউ কেউ বলেন চিকিৎসা করানো সুন্নাত। চিকিৎসা করাতে থাকবে, কিন্তু রোগ নিরাময়ের ব্যাপারে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে।
v  শরীয়তের বরখেলাপ তাবীজ-তুমার, ঝাড়-ফুক ব্যবহার করা জায়েয নয়। শরীয়ত সম্মত তাবীজ ও ঝার ফুঁক করা হলে তা করা যায়, তবে উত্তম নয়।
v  শরীরে যদি অস্বাভাবিকতা থাকে(যেমন আঙ্গুল বেশী আছে) তাহলে প্লাস্টিক সার্জারি করা জায়েয। নিছক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নয়।
v  চিকিৎসা অবস্থায় রোগের জন্য ক্ষতির বস্তু থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।

পান করার মাসায়েল


পান করার মাসায়েল

v  বসে পান করা সুন্নাত।
v  ডান হাতে পান করা সুন্নাত।
v  পাত্রের ভাঙ্গা স্থানে মুখ লাগিয়ে পান না করা আদব।
v  তিন শ্বাসে পান করা সুন্নাত।
v  পানির পাত্রের মধ্যে শ্বাস না ছাড়া এবং ফুঁক না দেয়া।
v  শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা সুন্নাত।

বিপদ-আপদ ও বালা-মুসীবত কেন আসে এবং তখন কী করণীয়?


বিপদ-আপদ ও বালা-মুসীবত কেন আসে এবং তখন কী করণীয়?

­মানুষের উপর বিপদাপদ ও বালা-মুসীবত কখনও তার পাপের কারণে এসে থাকে। এটা এ জন্যে এসে থাকে যেন সে ভবিষ্যতে পাপের সতর্ক হয়ে যায়। অতএব এ বিপদ-আপদ তার প্রতি এক প্রকার রহমত।
আবার কখনও বিপদ-মুসীবত তার পরীক্ষা স্বরুপ এবং তার দরজা বুলন্দ করার জন্যও এসে থাকে। এটাও তার প্রতি আল্লাহর রহমত। তবে বিপদ-আপদ আসলে এটা নিজের পাপের কারণেই এসেছে তাই মনে করতে হবে এবং সে প্রক্ষিতে বিনয়ী হতে হবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে আর বিপদ থেকে পরিত্রাণ চাইতে হবে।

খাওয়ার মাসায়েল


খাওয়ার মাসায়েল
1.        খাওয়ার পূর্বে জুতা খুলে নেয়া আদব। আজকাল চেয়ার টেবিলে খেতে যেয়ে অনাকেই এই আদবটি রক্ষা করেন না। খেয়াল রাখা চাই।
2.        খাওয়া শুরু করার পূর্বে উভয় হাত কবজি পর্যন্ত ধৌত করে নেয়া সুন্নাত।
3.        কুলি করা সুন্নাত, যদি প্রয়োজন হয়।
4.        বিনয়ের সাথে, বিনয়ের ভঙ্গিতে বসা আদব। আসন গেড়ে বসা বেশী খাওয়ার নিয়তে বা তাকাব্বুরের জন্যে হলে মাকরুহ, অন্যথায় জায়েয।
5.        দস্তর খানা বিছানো সুন্নাত।
6.        যমীনের উপর বসবে এবং বসার বরাবর খাদ্যের বরতন রাখবে। চেয়ার টেবিলে খাওয়া নিষিদ্ধ না হলেও যেহেতু চেয়ার টেবিলে খাওয়াতে অনেকগুলো সুন্নাত ও আদব বর্জিত হয়, অতএওব তা পরিত্যাজ্য।
7.        হেলান দিয়ে না খাওয়া (এমনকি হাতে ভর করেও না)।

Tuesday, October 18, 2011

মরণের পরে হাসি


মরণের পরে হাসি
ইমাম মুসলিম (রহঃ)-এর উস্তাদ রিবয়ী ইবনে হিরাশ (রহঃ) একদিন প্রতিজ্ঞা করে বললেন, “যতক্ষন পর্যন্ত আমি বেহেশতের সুসংবাদ পাব না, ততক্ষন পর্যন্ত হাসব না”। তারপর থেকে তিনি জীবনে কখনও হাসেন নি।
যখন তিনি মৃত্যূবরণ করেন, মৃত্যূর পর হাসতে লাগলেন। উপস্থিত লোকজন তার হাসি দেখে হতভম্ব হয়ে গেলেন। তাঁরা বলাবলি শুরু করলেন, জীবনে যিনি কখনও হাসেননি, মৃত্যূর পর তিনি হাসছেন! তার কারণ কি?

প্রতিশ্রুতি পূরণ


প্রতিশ্রুতি পূরণ

মোঘল সম্রাট হুমায়ূনের শাহী মহল। ভেতরে জরুরী বৈঠক বসেছে। চারদিকে সতর্কতার সাথে পাহারা দিচ্ছে প্রহরীরা।
দিল্লীর আকাশ থেকে দূর্যোগের ঘনঘটা এখনও কাটেনি। কিছুদিন আগেই ঘটে গেছে বিখ্যাত চৌসার যুদ্ধ। সেখান থেকে স্বয়ং রাজাকেই কোনমতে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসতে হয়েছে। শাহী মহলের প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে চারদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছিলো এক প্রহরী। হঠাত তার দৃষ্টিতে পড়লো এক ভিস্তিওয়ালা। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে প্রধান ফটকের দিকে। পরনে ছেড়া-ময়লা জামা। কাঁধে বহন করছে ছাগলচামরার ভিস্তি।
সন্দেহের দোলায় দুলে উঠলো প্রহরীর মন। কোন গুপ্তচর নয় তো। পাগলও হতে পারে। হাঁক ছেড়ে ভিস্তিওয়ালার গতি থামিয়ে দিলো প্রহরী। চরা গলায় জানতে চাইল, কাকে চাই? যাচ্ছ কোথায় তুমি? শান্ত ও ধীর কন্ঠে উত্তর দিলো ভিস্তিওয়ালা, ‘আমাকে বাদশাহর কাছে নিয়ে চলো’।
অট্রহাসি দিয়ে প্রহরী বললো, ‘ফকির সাহেব! বাদশাহর সাথে দেখা করতে চাও? শখ তো দেখি কম না! ভাগো এখান থেকে’।
কিন্তু ভিস্তিওয়ালা নাছোড় বান্দা। সে জোর দিয়ে বললো, আমাকে বাদশাহর কাছে নিয়ে যাও।
এবার প্রহরী ক্রুদ্ধ হয়ে ভিস্তিওয়ালাকে আটকে রেখে বাদশাহর কাছে খবর পাঠালো- জাহাপনা এক ভিস্তিওয়ালা আপননার সাথে দেখা করতে চায়।
কর্মব্যস্ত বাদশাহ হুমায়ুন আদেশ দিলেন- তাঁকে এক্ষুণি পাঠিয়ে দাও।
রাজশিংহাসনে বসে আছেন বাদশাহ হুমায়ুন, রাজদরবারে প্রবেশদ্বার দিয়ে ধীরে ধীরে প্রবেশ করলো ভিস্তিওয়ালা। আশা নিরাশার দ্বন্দে দোদুল্যমান তার মন। কাঁধে এখনও চেপে রেখেছে সেই ছাগলচামড়ার ভিস্তিটি।
হুমায়ুনের দৃষ্টি ছুটে গেল ভিস্তিওয়ালার দিকে। সাথে সাথে তার মস্তিষ্ক তোলপাড় করে উঠলো। পুরনো কিছু স্মৃতি হানা দিলো তাঁর মগজের শিরা-উপশিরায়। ‘আরে! এতো সেই মহান লোক- যিনি আমার প্রাণ রক্ষা করেছিলেন’। হুমায়ুনের চোখে ভেসে উঠলো সেই খরস্রোতা নদীর ঘটনা।
একবার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে শত্রুর তাড়া খেয়ে এ নদীতেই ঝাঁপ দিয়েছিলেন তিনি। ফলে প্রাণ বাচানো দায় হয়ে পড়েছিলো। সেই সময় এই ভিস্তিওয়ালা তাঁর ছাগলচামড়ার এই ভিস্তি দিয়ে সাঁতার কাটতে সাহায্য করেছিলো। এই ভিস্তির উপর ভর করেই তিনি কূলে উঠে এসেছিলেন। সে সময় তাঁর প্রাণ রক্ষাকারীকে বলেছিলেন-“আমি যদি দিল্লীর সিঙ্গহাসন পাই, তুমি দেখা করবে। তুমি যা চাইবে, আমি তা-ই উপহার দেব”। এখন সেই ভিস্তিওয়ালা তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে। আর ভাবতে পারলেন না হুমায়ুন। স্বররণখচিত সিংহাসন ছেড়ে ছুটে গিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলেন ময়লা জামা পরিহিত ভিস্তিওয়ালাকে। জড়িয়ে ধরেই ব্যাকুল কন্ঠে বললেন, ‘মহামান্য, আমি আপনার দ্বারা উপকৃত। বলুন, আপনি কি চান? আপনি যা চাইবেন, আমি ইনশাআল্লাহ্‌ বিনা-দ্বিধায় তাই দেব’।
ভিস্তিওয়ালা বললো, ‘আমি চাই আপনাকে সরিয়ে সিঙ্ঘাসনে বসতে’সমস্ত সবাসদ অবাক! লোকটির চাহিদার কথা শুনে সবার চোখ কপালে উঠে গেলো। লোকটি পাগল নাকি। একেবারে রাজসিঙ্ঘাসন চেয়ে বসলো! দেখা যাক বাদশাহ কি করেন।
এবার বিস্ময়ের ঘোরে সবাই লক্ষ্য করলো, প্রতাপশালী মোঘল সম্রাট হুমায়ুন মাথার মুকুট খুলে সম্মানের সাথে পরিয়ে দিচ্ছেন ভিস্তিওয়ালার মাথায়। নতুন রাজাকে সিংহাসনে বসিয়ে দিয়ে ঘোষনা করলেন, আজ থেকে ইনিই তোমাদের রাজা। আমি তাঁর নগন্য খাদেম।
গোটা দিল্লীতে তোলপাড়। প্রজাদের প্রশ্নবানে জর্জরিত হচ্ছেন হুমায়ুন। কেন তিনি সিংহাসন ছেরে দিলেন?
হুমায়ুন উত্তর দিলেন, ‘হাদীস শরীফে আছে, মুনাফিকের লক্ষণ তিনটি। তারমধ্যে একটি হচ্ছে- প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা। আমি তো নদীতে ডুবে মারা যেতাম-যদি এই ভিস্তিওয়ালা সাহায্য না করতেন। তার উপকারের বদলায় তিনি যা চাইবেন তা-ই দেব বলে কথা দিয়েছিলাম। সেজন্য সিংহাসন চাওয়াই আমি তাঁকে তা-ই দিলাম’।
অবশেষে একদিন ও একরাত্রি যাপনের পর ভিস্তিওয়ালা হুমায়ুনের মাথায় পুনরায় মুকুট পরিয়ে দিলো। হুমায়ুনকে সিংহাসনে বসিয়ে হাত তুলে দু’আ ও করমর্দন করে বললো, ‘আমি বড় পুরষ্কার পেয়েছি। তা হচ্ছে-আপনার মহানুভবতা ও চরিত্রের দৃঢতা’।
আসুন  আমরা আমদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে চেষ্টা করি।

Sunday, October 16, 2011

মীলাদুন্নবী-র গোড়ার কথা


মীলাদুন্নবীর গোড়ার কথা

খৃষ্টানরা যে ভাবে ভাল একটি উদ্দেশ্য নিয়ে হযরত ঈসা (আঃ) এর জন্ম দিবস পালন করা শুরু করেছিল ঠিক সেই ভাবেই শুরু হয়েছিল মীলাদুন্নবী উদযাপন। জনৈক বাদশাহর মনে খেয়াল হল যে, খৃষ্টানরা যখন ক্রীস্টমাস ডে পালন করে তখন আমরাও যদি আমাদের নবীর জন্ম দিবস পালন করি তাহলে ক্ষতি কি? ব্যস! যেই ভাবা সেই কাজ। কিন্তু আজ দেখুন সেটা কোন পর্যায়ে পৌছে গেছে।