Friday, July 22, 2011

নারীর মর্যাদা ও সম্মান


নারীর মর্যাদা ও সম্মান
   আল্লাহ তা’আলা মহিলাদেরকে যেভাবে দুনিয়াতে মর্যাদাশীলা ও সম্মানীতা বানিয়েছেন, কোন কোন ক্ষেত্রে পুরুষদের সমান অধিকার, আর কোন কোন ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকেও বেশী অধিকার দিয়েছেন, তদ্রুপ আখিরাতেও ছাওয়াবের দিক দিয়ে তাদেরকে মর্যাদাশীলা করেছেন। যেমন- আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি নেক আমল করবে, চাই পুরুষ হোক বা নারী হোক, যদি ইমানদার হয়, তাকে আমি দুনিয়াতে প্রশান্তির যিন্দেগি দান করব এবং পরকালে তাদের আমলের উত্তম প্রতিদানে পুরস্কূত করব”। এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা পুরুষ ও মহিলা উভয়কেই আমলের প্রতিদানের দিক দিয়ে সমান বলে ঘোষনা করেছেন।
  অন্য আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “হে মানবমণ্ডলী! আমি তমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন নারী হতে এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হও। নিশ্চই আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্মানিত- যে সর্বাধিক পরহেযগার”। এ আয়াতের ভাষ্যে বুঝা যাচ্ছে যে, কোন মহিলা যদি কোন পুরুষ থেকে অধিক পরহেযগার হয়, তাহলে তার মর্যাদা সেই পুরুষ থেকে বেশী হবে।
হাদীস শরীফে নারীদের সম্মান ও মর্যাদা সম্পর্কে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। নিম্নে এ বিষয়ে কিছু গুরুত্তপূর্ণ হাদীস পেশ করা হল-
    নারীর অনন্য মূল্যায়নঃ হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, “পৃথিবীর মধ্যে আমার প্রিয় বানানো হয়েছে-নারী, সুগন্ধী ও নামাযের মধ্যে আমার চোখের শীতলতা”। উক্ত হাদীস দ্বারা জানা গেল যে, মহিলাগণ আল্লাহর নবীর প্রিয় হওয়ার অনন্য সম্মান লাভ করেছেন।
   নেককার নারীদের ফজীলতঃ উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! দুনিয়ার নারীগন কি সুন্দরী হুরে-ঈনগনের থেকেও উত্তম? রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, হ্যাঁ দুনিয়ার(দ্বীনদার) নারীগন বেহেশ্তের সুন্দরী হুরদের থেকেও উত্তম-যেমন কাপড়ের উপরের পিঠ কাপড়ের ভিতরের পিঠ হতে উত্তম”।
    নেককার নারীদের মরযাদাঃ  হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পবিত্র বাণী বর্ণনা করেন যে, “এ বিশ্বভূ-মন্ডলের পুরোটাই ভোগ-সম্ভার। তন্মধে সর্বোত্তম সম্পদ হল সতকরমপরায়ন নারী। একজন নেক ও সতকরমপরায়ন নারী এক হাজার বে-আমল পুরুষ হতে উত্তম। নিশ্চই পৃথিবীর নেক বখত নারীরা জান্নাতের মধ্যে সত্তর হাজার আনত নয়না রুপসী হুরদের চেয়েও উত্তম হবে”।
   নেককার নারী স্বামীর জন্য অমূল্য রত্নঃ হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, “আল্লাহ তা’আলা যাকে নেককার স্ত্রী দান করেছেন, তাকে অর্ধেক দ্বীন দ্বারা সাহায্য করেছেন। এখন তাঁর কর্তব্য হলো-‘তাকওয়া’ (খোদাভীরুতা) দ্বারা বাকী দ্বীন অর্জন করা”।
   হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কোন মহিলাকে তাঁর দ্বীনদারীর কারণে বিবাহ করল, সে নিজের অধঃপতনের পথে প্রাচীর নির্মাণ করল”।
   মহিলারা জান্নাতে অগ্রগামীনি হবেঃ হযরত আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, হে নারীজাতি! তোমাদের মধ্যে যারা নেককার, তারা নেককার পুরুষদের আগে জান্নাতে প্রবেশ করবেতাদেরকে গোসল দিয়ে খুশবু মাখিয়ে নিজ নিজ স্বামীর নিকট অর্পণ করা হবে। তখন তারা লাল ও হলুদ বর্ণের বাহনের উপর উপবিষ্ট থাকবে। তারা ছড়িয়ে থাকা মুক্তার মত গেলমান দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকবে
  হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বাণী বর্ণনা করেছেন যে, "জান্নাতে প্রবেশের সময় সবচেয়ে অগ্রগামীনি  
 ঐ সমস্ত মহিলাগন হবেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে অগ্রগামীনি"।
                                          (দ্রষ্টব্যঃ কিতাবুল হাদীস)

No comments:

Post a Comment